Tomar Biddaloy Jioboner Prothom Din Essay – প্রিয় বন্ধুরা তোমরা কি অনলাইনে ‘তোমার বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন’ বাংলা প্রবন্ধ রচনা টি খুঁজছো।তাহলে খুঁজতে খুঁজতে তুমি সঠিক পোস্টেই এসে উপস্থিত হয়েছো।
আমি তোমাদের কাছে এই প্রবন্ধ টি একবারে সহজ-সরল চলিত ভাষায় শেয়ার করবো।তাই তোমরা অত্যন্ত যত্ন সহকারে এই প্রবন্ধটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ো।তাহলে বন্ধুরা আর দেরি না করে শুরু করা প্রবন্ধ টি।
ভূমিকাঃ-
আমাদের প্রত্যেকেরই জীবনে এমন কিছু ঘটনা বা বিশেষ মূহুর্ত বা বিশেষ দিন থাকে যা আমাদের মনের স্মৃতি কোঠায় রয়ে যায় অর্থাৎ যা কোনো দিন-ই ভোলা যায়না। এমন-ই এক স্মরণীয় দিন বা ঘটনা হলো আমার বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন।বিদ্যালয় আমাদের সবার-ই একটি পছন্দের জায়গা।আমরা রোজ -ই বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা,গল্পগুজব বা আড্ডা দিয়ে থাকি।
আমি এখন আমার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ‘ক’ বিভাগের ছাত্র।এই বিদ্যালয়ে যখন আমি প্রথম দিন গিয়েছিলাম সেই দিন টি ছিলো আমার বিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন।
এই দিন থেকেই আমি বা আমরা আমাদের দীর্ঘ বিদ্যালয় জীবনের পথ চলা শুরু করি।একরাশ ভয় ও উত্তেজনা নিয়ে আমি বিদ্যালয়ে পা রেখেছিলাম।আজ সেই দিনের -ই কিছু মূহুর্ত সবার সাথে শেয়ার করবো।
বিদ্যালয়ে প্রথম দিনঃ-
বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন শুরু করেছিলাম কামরাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।নিতান্ত ছোট ছিলাম আমি। বাবার হাত ধরে চোখ ছলছল মুখে বিদ্যালয়ের নতুন পোশাক পরে সকাল সকাল বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলাম। যতদূর মনে পড়ে বিদ্যালয় সাড়ে দশটায় শুরু হতো। তখনও চুলের গেট পার হয়ে ভেতরে প্রবেশ করিনি ঢং ঢং করে বিদ্যালয়ের ঘন্টা বাজতেই বাবা হাত ছেড়ে দিলেন।
নিরুপায় হয়ে আমি আর পাঁচজন এর সাথে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রার্থনা সঙ্গীতের লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম। প্রার্থনা শেষে শিক্ষার্থীদের কলরবে মুখর হয়ে উঠলো বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ। ক্রমশ অচেনা মুখগুলো যেন নিজেদের মধ্যে পরিচয় করে নিতে চাইল।বিদ্যালয়ের প্রথম দিনই আমার বেশ কয়েকজন নতুন বন্ধু হয়ে গেল।
বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম শিশু শ্রেণীতে।যাই হোক বিদ্যালয়ের সেই প্রথম দিন শিক্ষক মহাশয়রা কেবল আমাদের সঙ্গে পরিচয় করেই ক্লাস সমাপ্ত করে দিয়েছিলেন।
প্রথম দিনের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাঃ-
শ্রেণিকক্ষে হয়তো আমি একদম নতুন ছিলাম।শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেই আমাকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।বসার জায়গা তো পেয়েছিলাম কিন্তু আমার লক্ষ্য ছিল আমার পাশে বসা ছেলেটি যেখানে জানালায় তার ব্যাগটি রেখেছিল তার সামনে আমার ব্যাগটা রাখবো। যেমনই ভাবা তেমনি কাজ।
ছেলেটির অনুপস্থিতিতে তার ব্যাগের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলাম আমার আমার ব্যাগটি।হইতো উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছিল কিন্তু ঘটলো অন্য বিপদ তার ব্যাগের ভিতর রাখা প্লেটটি আমার ব্যাগের চাপে ভেঙে গিয়েছিল। তার শব্দ আমি পেলেও ভয়ে চুপ করে বসে রইলাম। ক্লাস শুরু হলে রোহিত স্যার সকলকে স্লেট ও পেন্সিল বের করতে বললেন।
স্লেট বের করতে গিয়ে ভাঙ্গা স্লেট দেখে পাশে বসা ছেলেটি রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গেল। আমিও ভয়ে কুঁকড়ে রইলাম। তদন্তে কেউ ধরা না পড়তে সম্পূর্ণ দোষ গিয়ে পড়েছিল সেই ছেলেটির উপরেই।যেন সে তার নিজের স্লেট নিজেই ভেঙে ফেলেছে। বাড়িতে গিয়ে হয়তো তাকে শাস্তি পেতে হয়েছে। এই ঘটনাটি ভাবলে আমার মন আজও ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।
উপসংহারঃ-
দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর কেটে গেছে এই বিদ্যালয়ে তবুও এ বিদ্যালয়ের সম্পর্কে আমার আনন্দ উত্তেজনায় একটুও ভাটা পড়েনি।দোতলার দরজা বন্ধ ঘর গুলো আমায় আজও সেই প্রথম দিনের মতোই শিহরিত করে।এই বিদ্যালয়ে পা রাখলে আমি এখনো প্রথম দিনের মতোই গর্ব অনুভব করি। এরকম একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় পড়ার সুযোগ পেয়ে আমি নিজের ছাত্রজীবন সার্থক বলে মনে করি।