বিশ্ব উষ্ণায়ণ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং রচনা [Global Warming Essay]

Global Warming Essay – প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজ তোমাদের সাথে শেয়ার করবো এইবছরের জন্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবন্ধ।সহজ-সরল ভাষায় লেখা প্রবন্ধটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত যত্ন সহকারে পড়ো এবং পরীক্ষার জন্য তৈরি করো।

বিশ্ব উষ্ণায়ণ বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং রচনা [Global Warming Essay]

আমার বিশ্বাস তোমরা যদি এই প্রবন্ধ পরীক্ষায় খাতায় নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তোলো তাহলে অবশ্যই ফুলমার্কস পাবে। তাহলে চলো বন্ধুরা দেখে নেওয়া যাক প্রবন্ধ টি।

ভূমিকাঃ-

শতাব্দীর সূর্য যখন মধ্য আকাশে তখন সভ্যতার সর্বনাশী খেলার প্রতিশ্রুতিতে মানব জীবনে ঘনিয়ে আসে বিশ্ব উষ্ণায়নের মত এক চরম অভিশাপ। দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নের হাত ধরে প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন ও নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদনের ফল পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান উষ্ণতা বৃদ্ধি। বিশ্ব প্রকৃতির ভারসাম্য বিভিন্ন হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং।

বায়ুমন্ডলে অবস্থিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি গ্রীন হাউস গ্যাস উপস্থিত থাকে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের পরিমাণ বেড়ে গেলে ভূপৃষ্ঠ থেকে পুনরায় তাপ ফিরে এসে বাড়িয়ে তোলে উষ্ণতা। উনিশ শতকের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়েছে গড়ে প্রায় এক ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।

বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণসমূহঃ-

বিজ্ঞানীরা বিশ্ব উষ্ণায়নের অসংখ্য কারণ উল্লেখ করেছেন সেগুলি নিম্নলিখিতঃ-

১/ বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়া।

২/ শস্যক্ষেত্রে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং জৈবমল পচিত উদ্ভিদের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে বায়ুমন্ডলে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি।

৩/কৃষি ক্ষেত্রে নির্বিচারে নাইট্রোজেন ব্যবহার

৪/শিল্পক্ষেত্রে দ্রাবক,এরোসেল,প্লাস্টিক,ফোম ও প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত ঠান্ডা মেশিন ব্যবহারের ফলে বাতাসে CFC গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি।

৫/উন্নত জনজীবন প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক হারে বৃক্ষচ্ছেদন যা বিশ্বায়নের মূল কারণ।

বিশ্বায়নের প্রভাবঃ-

বিশ্বায়নের ভয়াবহ পরিণতিতে বরফাচ্ছাদিত পর্বত,অন্তহীন সমুদ্র,কল্লোলিত ঝর্ণা ও নদী,হিমঘর ও মেরুদেশ,বিস্তীর্ণ মরুরাজ্য,গভীর অরণ্য জীবনে কলরবে মুখরিত জনপদ ক্রমশ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ১৯৮২ থেকে সমুদ্র উপকূলে সৃষ্ট ‘এল নিলো’ নামক আবহাওয়ার এক জটিল প্রক্রিয়া অতিবৃদ্ধি ও অনাবৃষ্টি সমস্যাকে ক্রমশই জটিল করে তুলেছে।

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, উত্তর মেরুর বরফ অধ্যুষিত অঞ্চলে বরফের পরিমাণ ৫.৯ মিলিয়ন বর্গ মিটার থেকে ১.৯ বর্গমিটারে পৌঁচেছে এবং অচিরেই তা সম্পূর্ণ অপসৃত হয়ে সমুদ্রের বিশাল জলোচ্ছাস সৃষ্ট হবে বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।

বিজ্ঞানীদের অপর অনুমান ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়নের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে পৃথিবী ক্রমশ রুক্ষ শুষ্ক মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে।সমগ্র পৃথিবীতে কীট পতঙ্গের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।জলের গুণগত মান কমে গিয়ে প্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাবে।এককথায় সর্বাংশে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবী ও প্রকৃতি।

প্রতিরোধ ব্যবস্থাঃ-

১৯৬৫ সালে আমেরিকার বিজ্ঞানীর মধ্যে প্রথম বিশ্ব উষ্ণায়নের ভয়াবহতা বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ পায়।এই বিষয়ে ১৯৭৯ তে জেনেভা সম্মেলন,২০০৭ সালে অপর এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুমান করা যায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে,অপ্রচলিত শক্তি ও জৈব সারের ব্যবহার বাড়িয়ে এছাড়া পেট্রোলিয়াম এর অপচয় রোধ করে, নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন কমিয়ে বিষ্ণায়ন কমানো সম্ভব।

উপসংহারঃ-

শিক্ষিত বিজ্ঞান সচেতন মানবজাতির সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে বিষ্ণায়নের কুফল বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো।আগামী প্রজন্মকে অবশ্যম্ভাবী ধ্বংসের অভিমুখ থেকে প্রত্যাগমন করানোর জন্যে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।

Leave a Comment