মহররম কি? কেনো পালন করা হয়? আশুরার গুরুত্ব
***মহররম আরবী বৎসরের প্রথম মাস।
মহররম মাস কেনো পালন করা হয়?
মহররম মাসের অসংখ্য ফজিলত রয়েছে নিম্নে কিছু আলোচনা করা হইল:-
প্রথম স্থানীয় হওয়ার কারণে ইঁহার একটি স্বতন্ত্র মর্যাদা আছে। মহররম অর্থ নিষিদ্ধ বা সম্মানিত । অর্থাৎ এই মাসে ঝগড়া-বিবাদ বা যুদ্ধ-বিগ্রহ করা শরীয়তে নাজায়েয বা নিষিদ্ধ। এই জন্যই মহররম মাসকে পবিত্র মাস বলা হয়। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মাসে কখনও কাফের-মোশরেকদের সাথে ঝগড়া কলহে লিপ্ত হইতেন না। এমনকি অন্ধকার যুগের কাফেররাও সাধারণতঃ যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে বিরত থাকিত |
মহররমের বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হইল, দুনিয়ার বহু উল্লেখযোগ্য ঘটনা এই মাসে বিশেষ করিয়া ইয়াওমে আশুরা বা আশুরার দিন সংঘটিত হইয়াছে। এই জন্যই আশুরার অনেক ফজিলত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ।
এই মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ আশুরার দিন আল্লাহ তা’য়ালা আকাশ,পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, লাওহ্-কলম ইত্যাদি সৃষ্টি করিয়াছেন। হযরত আদম(আঃ) কে এই দিন সৃষ্টি করিয়াছেন ও বেহেশতে প্রবেশ করাইয়াছেন এবং এই দিনই তাঁহার দোয়া কবুল করিয়া গুনাহ ক্ষমা করিয়াছেন।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এই দিন জন্ম গ্রহণ করিয়াছেন। হযরত মূসা (আঃ) কে এই দিনই নীলনদ পার করাইয়া তাঁহার শত্রু ফেরাউনকে ডুবাইয়াছেন। হযরত আইয়ুব (আঃ) এই দিন মছিবত থেকে উদ্ধার পাইয়া ছিলেন। হযরত ঈসা(আঃ) এই দিন জন্ম গ্রহণ করিয়াছেন।
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কলিজার টুকরা হযরত হোসাইন (রাঃ) কারবালা প্রান্তরে ইসলামের জন্য যুদ্ধ করিয়া এই দিনই শাহাদত বরণ করিয়াছেন। সেই ঘটনা সর্ব সাধারণের কাছে প্রসিদ্ধ। এই দিনই হযরত ইউনুস (আঃ) এর তওবা কবুল হয় । এই দিন হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি লাভ করিয়া পাহাড়ে আসিয়া লাগে। এই দিনই কিয়ামত সংঘটিত হইবে।
হাদীস শরীফে আছে- হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন,যে-ব্যক্তি এই মাসের প্রথম রাত্রে প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার পরে ১০ বার সূরা ইখলাছসহ ৮ রাকাত নামায পড়িবে, কিয়ামতের দিন আমি তাহার এবং তাহার পরিবারবর্গের জন্য সুপারিশ করিব।
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন- যদি কোন ব্যক্তি মহররম মাসে একটি রোজা রাখে তবে ৩০টি রোজা রাখার ছওয়াব তাহার আমলনামায় লেখা হইবে। আর যে ব্যক্তি আশুরার দিনে রোজা রাখে আল্লাহ তাহাকে দশ হাজার ফেরেস্তার সমতুল্য নেকী প্রদান করিবেন।
অন্য এক হাদীসে আছে- আশুরার দিন যে ব্যক্তি একটি রোজা রাখিবে,আল্লাহ তা’য়ালা তাহাকে দশ হাজার শহীদ ও দশ হাজার হাজীর সমতূল্য ছওয়াব দান করিবেন।যে ব্যক্তি আশুরার দিনে কোন রোগীর সেবা করে সে যেন হযরত আদম (আঃ) এর সমস্ত সন্তানগণের সেবা করিল।
যে ব্যক্তি আশুরার দিনে সূরা ফাতেহার পরে ৫০ বার সূরা ইখলাস সহ ৪ রাকাত নামায পড়িবে, আল্লাহ তা’য়ালা তাহাকে ৫০ বৎসরের গুনাহ ক্ষমা করিয়া দিবেন এবং তাহার জন্য এক সহস্র নূরের মহল তৈয়ার করিবেন।
যে ব্যক্তি আশুরার দিনে রোজা রাখিবে তাহার রুজী রোজগারে আল্লাহ তা’য়ালা বরকত দান করিবেন এবং একটি রোজার দ্বারা চল্লিশ বৎসরের গুনাহের কাফফারা হইবে।
বণি ইসরাঈলদের জন্য মাত্র একটি রোজা ফরয ছিল। সেটা হইল,১০ই মহররম অর্থাৎ আশুরার দিনের রোজা।
মহররমের রোজা কত তারিখে? আশুরার রোজা কয়টি?
উঃ- মহররমের রোজা পবিত্র মহররম মাসের ১০ তারিখ পালন করা হয় অর্থাৎ আশুরার দিনে।
**আশুরার রোজা সম্পর্কে বিভিন্ন মতান্তর রহিয়াছে……….সেইদিক বিবেচনা করিলে আশুরার রোজা হইবে মহররমের ১০ তারিখ ১ টি,আর ৯ তারিখ অথবা ১১ তারিখ আরও ১ টি***