ছাত্রজীবনে খেলাধুলার ভূমিকা রচনা [Chatro Jiobone Khela Dhular Bhumika]

ভূমিকাঃ-

ছাত্রজীবন স্বপ্নময়। এই পর্বেই জীবনের শুভ আর আশাবাদের দিকগুলি বিকশিত হয়ে ওঠে ছাত্রদের সামনে। শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে শৃঙ্খলা,লড়াই করার মানসিকতা, বন্ধুত্ব, সহমর্মিতা সুষ্ঠু নীরোগ শরীর সবই গড়ে ওঠে এ সময়। আর গুণগুলি তৈরি হবার শ্রেষ্ঠ স্থান খেলার মাঠ। তাই ছাত্রজীবনে খেলাধুলার ভূমিকা সর্বাধিক।

ছাত্রজীবনে খেলাধুলার ভূমিকা রচনা [Chatro Jiobone Khela Dhular Bhumika]

খেলাধুলার প্রাসঙ্গিকতাঃ-

‘ছুটবো খেলবো হাসবো, সবারে ভালোবাসবো’ এই হল শৈশব,কৈশোরের আসল কথা।নিছক পুস্তকনির্ভর শৈশব কখনো ভালো হতে পারে না। তা জীবনের সর্বস্তরে বিপদ ডেকে আনে।

বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণ করে, সঠিক ভারসাম্য এনে দেয় তাই আমরা কেউই শুধুমাত্র ‘বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই চাইনা। আমরা চাই পূর্ণ মানুষ।

যে বুদ্ধি, বিদ্যা, জ্ঞান,শক্তি ও দূরদর্শিতায় নিজেকে ভরিয়ে তুলবে,আর হবে নীরোগ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। আর তাই খেলাধুলা চিরপ্রাসঙ্গিক।

বর্তমান পরিস্থিতিঃ-

সমস্তটা জেনে বুঝেও আজ আমাদের সমাজ ছুটছে এক ভুল পথে।বাবা-মা সবাই মিলে দিন রাত শিশুকে আবদ্ধ করছেন পড়াশোনায়। সকাল থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা না করলে শিশুটি নাকি পিছিয়ে পড়বে। আসলে যে তা সঠিক ভাবনা নয় তা অভিভাবকেরা বুঝতে পারবেন নিজের জীবনের সাফল্যের দিকে তাকালেই।

তাঁরাও কিন্তু শৈশব কৈশোর কাটিয়েছেন পড়াশোনার পাশাপাশি প্রচুর খেলাধুলা ও আনন্দের মধ্য দিয়ে।আজও তাই প্রয়োজন।অন্যথায় শিশুরা দুর্বলচিত্ত, রোগগ্রস্ত, স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়বে। যা কখনোই কাম্য নয় কারণ এই ধরনের মানুষের দ্বারা কখনো পরিবার সমাজ বা জাতির মঙ্গল হয় না। তারা শুধু সমস্যায় বাড়িয়ে তোলে।

মুক্তির উপায়ঃ-

প্রাথমিক স্তর থেকেই ছাত্র-ছাত্রীকে খেলাধুলায় উৎসাহ দিতে হবে।পাঠ্যসূচিতে রাখতে হবে শারীরশিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধান।অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষাঃ-

এই পদ্ধতিতে জোর দিতে হবে। আর চাই খেলার মাঠ। সরকারি স্তরে এই বিষয়ক আইন প্রণয়ন করতে হবে, প্রত্যেক বিদ্যালয়ের জন্য যেন খেলার মাঠে ব্যবস্থা থাকে। আমাদের ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ অনুসারে শিক্ষা প্রসারের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ জরুরী। বিদ্যালয় গুলিতে শুধু খেলার ক্লাসই নয়।মাঝে মাঝে বিভিন্ন খেলায় কৃতী, বিখ্যাত খেলোয়াড়দের বিদ্যালয় গুলিতে আমন্ত্রণ করে আলোচনা সভার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে উৎসাহিত হবে ছাত্ররা। ছাত্রদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পড়াশোনার সঙ্গে সমমর্যাদা দিতে হবে খেলাধুলাকে।

উপসংহারঃ-

খেলাধুলার মাধ্যমেই একটি জাতির চরিত্র গঠিত হয়। স্বদেশী আন্দোলনের যুগে বিপ্লবীরা লাঠিখেলা, কুস্তি, ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে শরীর চর্চা করতেন।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে নিয়মিত বসত কুস্তির আসর। রবীন্দ্রনাথ নিজে কুস্তি করতেন। স্বামী বিবেকানন্দ বেশ কিছুদিন কলকাতার ক্লাবে ফুটবল খেলেছিলেন- শুনে অবাক লাগলেও একথা সত্যি তাই খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না।

বিদ্যার্জনের সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলায় পারে আমাদের যথার্থ শিক্ষার আলোকবৃত্তে নিয়ে যেতে।এককথায় খেলাধুলা ছাড়া সাফল্য অধরা থেকে যাবে।

Leave a Comment