তোমার প্রিয় কবি/তোমার স্মরণীয় ব্যক্তি [Tomar Priyo Kobi]

ভূমিকাঃ-

আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুল ইসলাম দেশে-বিদেশে ‘বিদ্রোহী কবি’ ‘বুলবুল কবি’ বলে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর কাব্যে পরাধীনতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং মানব মর্যাদা ও সৌন্দর্য চেতনা সমন্বিত হয়েছে। তাঁর লেখনীর মাধ্যমে যুব সমাজ উদ্বুদ্ধ হয়েছে। তাঁর লেখায় অনুপ্রাণিত হয়ে যুবসমাজ দেশের কাজে দশের কাজে আত্মবিনিয়োগ করেছে।

জন্মঃ-

বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে মে (বাংলা ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

আমার প্রিয় হয়ে ওঠার কারণসমূহঃ-

নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীণা’ আমাকে মুগ্ধ ও আকর্ষণ করে। ‘বল বীর চির উন্নত মম শির’ এ কথা বলেই তাঁর ‘বিদ্রোহী’ নামক প্রসিদ্ধ কবিতা আরম্ভ। এ কথা কয়টি উচ্চারণ করার সাথে সাথে পাঠক ও শ্রোতা মাত্র যেন অন্য জগতে নীত হয়।

আবার দুনিয়ায় অবিচার ও জুলুমবাজির প্রবাহ চলছে। মানুষের পরাধীনতা ও গোলামির জিঞ্জির আজও ছিন্ন হয়নি। সামাজিক রাষ্ট্রীয় ও ধর্মক্ষেত্রের অন্যায় অবিচার আজও আকাশ-বাতাসে মুখরিত হয়ে উঠেছে। মূর্তিমান অন্যায় ও অকল্যাণ জগদ্দল পাষাণের মত মানুষের বুকে চেপে বসে আছে। মেহনতী মানুষের কান্নার জলে আজ আকাশ বাতাস আবিল হয়ে উঠেছে।

তোমার প্রিয় কবি/তোমার স্মরণীয় ব্যক্তি [Tomar Priyo Kobi]

তাঁর বিরুদ্ধে মানুষ বিদ্রোহ না করে থাকতে পারেনা।সচেতন মানুষ শান্ত হতে পারে না।তাই কবির সাথে কন্ঠ মিলিয়ে আমারও বলতে ইচ্ছা হয় ”যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,/ অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না/ বিদ্রোহী রণক্লান্ত।/ আমি সেই দিন হব শান্ত।/নজরুল ইসলামের বিদ্রোহের সুর তার প্রথম দিকের কাব্য রচনার প্রায় সবগুলোতেই কমবেশি লক্ষ্য করা যায়।

তাঁর ‘অগ্নিবীণা’ ‘ভাঙ্গার গান’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে এর বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। আগুনের মতো উজ্জ্বল এসব বইয়ের কবিতাগুলোতে ভাবের সাথে ভাষার সংগতি ও মিল অনবদ্য।

মানুষের কবি নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার কথাকে কাব্য ও গানে রূপদান করেছেন। তাঁর রচিত দেশাত্মবোধক গান আজ ভারত উপমহাদেশের মানুষের মুখে মুখে সভায় সভায় আসরে আসরে গীত হয়।এই বিদ্রোহী কবির লেখনীর অবদান অনস্বীকার্য।

মৃত্যুঃ-

ইংরেজি ১৯৪৫ সালের দিকে কবি কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। ১৯৭২ সালে কবিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে আনা হয় এবং নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। ২৯শে আগস্ট ১৯৭৬ সালে (বাংলা ১২ই ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে) তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাকে সমাহিত করা হয়।

উপসংহারঃ-

কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় শক্তি সাহস এবং চরিত্রের বাস্তব প্রতিমূর্তি। আমাদের জাতীয় সমৃদ্ধিতে তার বহু অবদান রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি।তাঁর নামে ঢাকায় নজরুল ইনস্টিটিউট স্থাপন হয়েছে। আমাদের উচিত তাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করা। এই বিদ্রোহী কবি আজও আমাদের অন্তরে চিরজীবিত রয়েছে ও আগামী প্রজন্মের কাছেও থাকবে।

Leave a Comment