স্বাধীনতা দিবস রচনা [Shadhinota Dibosh Essay] – বন্ধুরা তোমরা কি অনলাইনে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের উপর একটি প্রবন্ধ খুঁজছো? যদি তাই হয় তাহলে অবশ্যই তুমি সঠিক পোস্টেই এসে উপস্থিত হয়েছো।
এই পোস্টে আমি তোমাদের জন্যে একদম সহজ-সরল ভাষায় এই আর্টিকেল টি লিখে রেখেছি।যদি তোমরা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে এটি পড়ে তৈরি করো গ্যারান্টি তুমি ফুলমার্কস পাবেই। তাহলে আর দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক এই প্রবন্ধ টি।
ভূমিকাঃ-
১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ একটি তারিখ যা আমাদের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়েছে। দীর্ঘ দুইশো বছরের ইংরেজদের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছিল এই ভারতবর্ষ।কঠিন অন্যায়-অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার দিন এই ১৫ ই আগস্ট যা আমরা প্রত্যেক বছর অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে পালন করি।
স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ ইতিহাসঃ-
১৬০০ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে আসা এই ইংরেজরা ছলে বলে কৌশলে ভারতবর্ষকে তাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে ফেলেছিল অর্থাৎ গোটা ভারতবর্ষে তাদেরই দাপট বজায় রেখেছিল।ব্রিটিশরা ভারতবর্ষ দখল করার পর আমরা নিজ জন্মভূমিতেই ইংরেজদের দাসে পরিণত হলাম। অর্থাৎ নিজেদের টাকা,শস্য,জমি-জায়গা,বিষয়-সম্পত্তি কোনো কিছুর উপরই আমাদের কোনো অধিকার ছিলোনা।
তারা যা খুশি তাই করত অর্থাৎ তারা চরম অত্যাচার করে কৃষকদের নীল চাষ করতে বাধ্য করত আর সেই নীল থেকে তারা প্রচুরপরিমাণে মুনাফা অর্জন করতো শুধু কি তাই যদি কোনো কৃষক চাষ করতে রাজি হতো না পরিবারের মা-বোনে দের ইজ্জত নিয়ে তারা খেলতো এমনকি সেই কৃষককেও চরম শাস্তি ভোগ করতে হতো।
যখনই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হতো তখনই আরও অন্যায়-অত্যাচারের পরিমাণ ডবল হয়ে যেতো।তবুও আমাদের দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী আন্দোলন অব্যাহত থাকতো।এইভাবে ক্রমাগত ইংরেজ দের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পড়তে আজ আমরা এই দিনটিতে এসে উপস্থিত হয়েছি।
মুক্তিযোদ্ধাদের অসামান্য অবদানঃ-
ভারতের প্রথম সারির মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথমেই যার নাম আসে তিনি হলেন গান্ধীজি।যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন এবং বেশ জনপ্রিয়ও ছিলেন।তিনি সবাইকে সত্য ও অহিংসার শিক্ষা দিয়েছিলেন যাকে হাতিয়ার করে তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের পথে অগ্রসর হয়েছিলেন। গান্ধীজি দেশ থেকে বহু খারাপ প্রথার অবসান ঘটিয়েছিলেন এবং সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে এক ছাতার নীচে নিয়ে এসেছিলেন যার কারণে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইটা সহজ হয়ে গিয়েছিল।প্রতিটি মানুষ ই তাকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন এইজন্য তারা তাকে ‘বাপু’ বলে ডাকত।
সাইমন কমিশন ছিলো ভারতীয়দের উপর দম বন্ধ করা একটি কমিশন যার কারণে গান্ধীজির নেতৃত্বে মানুষজন একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিল এই কমিশনের বিরুদ্ধে কিন্তু আচমকাই ব্রিটিশরা এই জনতার উপর লাঠিচার্জ করে ফলে লাঠির আঘাতে লালা লাজপত রায় মারা যান।এতে আঘাত পেয়ে ভগৎ সিং,সুখ দেব,রাজ গুরু স্যাণ্ডার্সকে হত্যা করেন।পরিবর্তে এই তিন বিপ্লবীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
দীর্ঘ দুশো বছরের ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানোর পিছনে আরও বহু দেশপ্রেমীর অবদান অনস্বীকার্য।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সুভাষচন্দ্র বসু,ক্ষুদিরাম বসু,বিনয়-বাদল-দিনেশ,মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,মাষ্টারদা কত শত শত নাম রয়েছে যাদের তাজা রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।
স্বাধীনতা মানেই রঙিন উৎসবঃ-
স্বাধীনতা পালনের মধ্যে দিয়ে সারা দেশে এক সপ্তাহ আগে থেকে বাজারে প্রচুর আলো দেখা যায়।কখনও তিন রঙের রঙ বিক্রি হয় আবার কোথাও বা তিন রঙের লাইট।সর্বত্রই খুশির হাওয়া আবার কোথাও বা দেশাত্মবোধক গানে পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠে। কোথাও গান-বাজনার মধ্যে দিয়ে সারা দেশে এই উৎসব পালিত হয়।এইভাবে জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই এই উৎসবে মেতে উঠে।
উপসংহারঃ-
এই উৎসব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় অমর বীরদের আত্মবলিদানের কথা।যাতে কারও ব্যবসার অজুহাতে আবার শাসন করার কোনো সুযোগ ই না পায়।আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম কে সদা-জাগ্রত থাকতে হবে যেন কোনো ভাবেই আমারা পুণরায় কারও অধীনে না চলে যায়।এই খুশির দিনে সবাই মিলে সুস্বাদু খাবার খায় এবং একে অপরের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।