কেনারাম ও বেচারাম
কোনো কিছু কেনার ও বেচার ক্ষেত্রে কেনরাম ও বেচারাম [Kenaram o Becharam Ki] এই শব্দদুটো ব্যাবহার হয়ে থাকে, যেখানে এক শ্রেণীর ধুরত ও চালাক মানুষরা অন্যান্য সারারণ সাধাসিধে মানুষদের ঠকিয়ে জিনিসপত্র কেনা বেচা করত।
আমরা প্রাচীন কালে ইতিহাসে সাধারণত ৪ শ্রীনির মানুষের কথা জেনেছি, এরা হলো ব্রাম্ভন, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য আর শুদ্র।
- ব্রাম্বন – উপরের শ্রীনির বা বড়লোক মানুষজন।
- ক্ষত্রিয় – ব্রাহ্মণের নিচে এদের স্থান, এরাও সুবিধা ভোগী।
- বৈশ্য – তারাই বৈশ্য যারা ক্ষত্রিয়দের নিচে, শূদ্রদের শাসন করে থাকে।
- শুদ্র – এরা সমাজের সব থেকে দরিদ্র, শোষিত, নিপীড়িত মানুষ।
মধ্য যুগ আর আধুনিক যুগের প্রথম দিকে, কিছু স্বার্থপর, স্বার্থ লোভী মানুষ, নিচের শ্রেণীর মানুষদের দিয়ে অনেক পরিশ্রম করিয়ে নিত আর মজুরিও অনেক কম দিত। এখান থেকেই কেনারাম ও বেচারাম শব্দ গুলির উৎপত্তি।
- আরও পড়ুন – স্বচ্ছ ভারত অভিযান রচনা [Swachh Bharat Abhiyan]
কেনারাম ও বেচারাম কি? মধ্য যুগের শেষের দিকে আর আধুনিক যুগের শুরুর দিকে, কিছু স্বার্থ লোভী সুবিধাভোগী ব্যাবসায়ী সাঁওতালদের থেকে চাষ বাসের জিনিস, ফসল, আর শস্য ক্রয় করত বা কিনত। কেনার সময় ওজন করার জন্য তুলা যন্ত্রের ব্যাবহার করত। কেনার সময় তারা বেশি ওজনের বাটখারা ব্যাবহার করত। এতে করে তারা অনেক বেশি পণ্য ঠকিয়ে নিয়েনিত। এই ব্যাপারটাকে কেনারাম বলা হত। আবার একই পণ্য অন্য সাঁওতালদের বিক্রি করার সময় তুলনা মূলক অনেক কম ওজনের বাটখারা ব্যাবহার করত, যার ফলে তাদের অনেক কম পরিমাণ পণ্য দিতে হত। এই ব্যাপারটাকে বেচারাম বলা হত।
গুরুত্বপূর্ন তথ্য-
- কেনারাম ও বেচারাম দুটো কথা মাত্র
- এই কথা দুটিও সাঁওতালদের ঠকানোর জন্য ব্যাবহার হত।
- কেনারাম হলো একটি বেশী ওজনের বাটখারা।
- বেচারাম হলো একটি কম ওজনের বাটখারা।
- কেমারাম ব্যাবহার হত পণ্য কেনার জন্য।
- বেচারাম ব্যাবহার হত জিনিপত্র বিক্রি করার জন্য।
- আধুনিক যুগের উন্নতির সাথে সাথে, এই ব্যাবহার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
নিজস্ব মন্তব্য:
বর্তমান অধুনিক কালে, আমরা এই দুটো শব্ধ ব্যাবহার করি কিন্তু এর অর্থের পরিমাণ পাল্টে গেছে, যখন করে বেশি বাড়ি কেনা কাটা করে, তাকে আমরা কেনা রাম বলি। আবার যখন কেউ ঘরের জিনিস পত্র, আসবাব, জমিজামা ক্রমাগত বিক্রি করতে থাকে তখন সেই ব্যাক্তি কে বেচারাম মন্নাও বলা হয়ে থাকে।