প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজ এই আর্টিকেলে আমি তোমাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা শেয়ার করবো। যেটি এইবছর তোমাদের পরীক্ষায় আসার সম্ভাবনা প্রবল।যদি তোমরা এই প্রবন্ধ টি যত্ন সহকারে তৈরি করো এবং ঠিক এইভাবেই তোমরা খাতায় প্রবন্ধ টি ফুটিয়ে তোলো তাহলে অবশ্যই তুমি ফুলমার্কস পাবে গ্যারান্টি।তাহলে বন্ধুরা আর দেরি না করে চলো দেখে নেওয়া যাক এই গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ টি।
ভূমিকাঃ-
শিক্ষার কোন বয়স নেই।মানুষ আমৃত্যু শিক্ষা লাভ করে, কিন্তু মানুষের সম্পূর্ণ জীবনটাকেই ছাত্র জীবন বলা চলে না জীবনের প্রথম দিকে যে সময়টা বিদ্যা লাভের জন্য স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অতিবাহিত হয় তাকে ছাত্র জীবন বলে অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যখন পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞান অর্জনের জন্য কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত থাকে তখন তাদের সেই জীবনকে ছাত্রজীবন বলা হয়।ছাত্রজীবন ভবিষ্যৎ জীবনের বীজ বপনের সঠিক সময়।ছাত্রজীবনের দায়িত্ব কর্তব্য অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সুসম্পন্ন করতে পারলে ভবিষ্যৎ জীবনে সফলতা অর্জিত হয় অর্থাৎ ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়।
ছাত্রজীবনঃ-
অধ্যায়নের জীবনটাই ছাত্রজীবন।প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাইরে বিভিন্ন গবেষণামূলক অধ্যয়নের সবটুকুই ছাত্র জীবনের অন্তর্গত।একজন ছাত্র কোন কিছুতেই পিছপা হয় না।ছাত্রজীবন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। ছাত্রজীবনেই মানুষ ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত গঠন করে। জীবনকে প্রাণপ্রাচুর্যে ভরে তোলার শিক্ষা মানুষ ছাত্র জীবন থেকে পায়।বদান্যতা, সততা ন্যায়-নিষ্ঠা,নিয়মানুবর্তিতা,দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ, মহানুভবতার শুরু হয় এই ছাত্র জীবন থেকেই। প্রতিটি ছাত্রই দেশ গড়ার কারিগর। ভবিষ্যতে তারাই দেশের নেতৃত্ব দেবে।
ছাত্রজীবনের কর্তব্যঃ-
ছাত্রদের প্রধান তপস্যা হচ্ছে অধ্যয়ন।ছাত্রজীবন কর্মজীবনে প্রবেশের প্রস্তুতিপর্ব।জ্ঞানার্জনে আত্মনিয়োগই একজন ছাত্রের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।তবে অধ্যয়নের পাশাপাশি শরীর চর্চার দিকেও নজর দিতে হবে কারণ সুস্থ দেহ-ই সুন্দর মন কিংবা স্বাস্থ্যই সম্পদ।এই ছাত্রজীবনেই তা অর্জন করতে হবে এইজন্য পরিমিত আহার,নিয়মিত ব্যায়াম ও সময়মতো খেলাধুলাও জরুরি।সেইসঙ্গে অবশ্যই পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
ছাত্রজীবনের দায়িত্বঃ-
ছাত্রজীবনে দেশ,সমাজ ও পরিবারের প্রতি গুরু দায়িত্ব থাকে।ছাত্রজীবন থেকেই দেশপ্রেম গড়ে তুলতে হবে।পাশাপাশি সমাজের কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে।এছাড়া পরিবারের সদস্যদের প্রতি সদাচার প্রদর্শন করতে হবে।সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।নিয়ম-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে,অধ্যবসায়ী হতে হবে,সৎ চরিত্রবান হতে হবে।
ছাত্রজীবনে দেশাত্মবোধঃ-
ছাত্রজীবন দেশাত্মবোধ গঠনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।এ সময় থেকেই দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে দেশের প্রতি অনুগত থেকে কাজ করে যেতে হবে। ছাত্রজীবনেই দেশপ্রেম, সেবাপরায়ণতা,স্বার্থত্যাগ, সাহসিকতা,জনসেবা, অধ্যবসায় প্রভৃতি গুণাবলী অর্জন করতে হবে।এ সময় থেকেই জনকল্যাণ করার মানসিকতা নিয়ে দেশ -প্রেমের প্রতি আত্মনিয়োগ করতে হবে।
পারিবারিক ক্ষেত্রে দায়িত্ব ও কর্তব্যঃ-
ছাত্ররা পরিবারের কাছ থেকে যেমন অনেক কিছু পায় তেমনি পরিবারের প্রতিও তাদের অনেক দায়-দায়িত্ব থাকে।পরিবারের সকলেই তাদের কাছ থেকে ভালো আচার -ব্যবহার প্রত্যাশা করে। পিতা-মাতা এবং পরিবারের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, ছোটদের প্রতি স্নেহপরায়ন হওয়া তাদের কর্তব্য।
নৈতিক মূল্যবোধ ও শিষ্ঠাচারঃ-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের শুধু পরীক্ষায় পাশের শিক্ষায় দেওয়া হয় না তাদের নৈতিক মূল্যবোধ এবং শিষ্টাচারের পূর্ণ শিক্ষা দেওয়া হয়। নৈতিক মূল্যবোধ একজন ছাত্রকে সৎ, কর্তব্য-নিষ্ঠ, নিয়মনিষ্ঠ, পরিশ্রমী সর্বোপরি সুন্দর চরিত্রের অধিকারী করে তোলে।প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠার জন্য চায় নৈতিকতা, শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধ।ছাত্রসমাজকে নম্র -ভদ্র ও নির্মল চরিত্রের অধিকারী করে পরিবারের সকলের প্রতি, শিক্ষকদের প্রতি, সহপাঠীদের প্রতি মার্জিত আচরণে ছাত্ররা সকলের কাছ থেকে ভালোবাসা, আশীর্বাদ এবং সাহায্য সহযোগিতা পায়। নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন এবং শিষ্টাচারের মধ্যেই ছাত্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে।
উপসংহারঃ-
ছাত্রজীবন-ই জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই এই সময় থেকেই ছাত্রদের নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে হবে। ছাত্ররাই ভবিষ্যতে সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে, তাই নিজেদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারলেই দেশ ও জাতির জন্য তারা গৌরব আনতে সক্ষম হবে অর্থাৎ দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।