পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও বিশ্বশান্তি রচনা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পারমাণবিক বোমাঃ-

পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও বিশ্বশান্তি রচনা – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় বিজ্ঞানীরা পরমাণুর ভিতর লুকানো বিপুল এক শক্তি আবিষ্কার করেন। পৃথিবীতে প্রথম পরমাণু বোমা তৈরি করল আমেরিকা। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জুলাই আমেরিকা প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়।

বোমার ভয়াবহতাঃ-

পরমাণু বোমার প্রথম প্রয়োগকারী হল আমেরিকা। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ছয় ই আগস্ট সোমবার জাপানের হিরোশিমা শহরে প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রটি বর্ষিত হয়।

বিস্ফোরণের শ্রেষ্ঠ ভয়াবহতা পেয়ে ঝলসে গিয়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের শরীর, আলফা বিটা আর গামা রশ্মিতে হিরো সীমার আকাশে।

মারা গেল ২ লক্ষ মানুষ। আবার ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ৯ ই আগস্ট আক্রান্ত হল দুই দশমিক সাত লক্ষ লোক। অধ্যুষিত নাগাসাকি শহরে কিন্তু ওই বিভীষিকা সত্বেও থেমে থাকে নি পরমাণু অস্ত্রের সমরসজ্জা।

এরপরেও আমেরিকা রাশিয়া ফ্রান্স চীন এবং 1974 খ্রিস্টাব্দে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সব মিলিয়ে দুই হাজারেরও বেশি বার পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে পৃথিবীর বুকে।

পরমাণু বোমা ও ভারতঃ-

ভারতে পরমাণু গবেষণার পথিকৃ ৎ হলেন ডক্টর হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা পরে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নিরলস চেষ্টায় 1956 খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে পারমাণবিক চুক্তি।

যার থেকে পাওয়া যায় পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের উপাদান প্রোটোনিয়াম এবং ভারী জল। এই গবেষণা ধরার ফলশ্রুতিতে ৭৪ খ্রিস্টাব্দে ১৮ই মে ভারত প্রথম পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটায় রাজস্থানের পরানে ভারত আবার এই অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়। এর দু একদিন পরে ১৩ই মে ঘটানো হলো আরো দুটি বিস্ফোরণ।

ভারতের বোমাঃ-দেশে দেশে আলোড়নঃ-

ভারতের এই পরমাণু বিস্ফোরণ দেশে এবং বিদেশে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করল। পরবর্তীকালে বহু বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষের প্রতিবাদে জেলি ভাই বিশ্বের একষট্টিটি দেশ রাষ্ট্রপুঞ্জের ব্যবস্থাপনায় অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধের জন্য একটি চুক্তি করে।

এই চুক্তিটির নাম কম্প্রইহেনসিভ টেস্ট ভ্যানটিটি এবং এর উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা।

আরো এর উদ্দেশ্য পৃথিবীকে আণবিক অস্ত্র মুক্ত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা। বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রের বিরোধিতার পটভূমিতে ভারতের সাম্প্রতিক বিস্ফোরণে একটি তীব্র আলোড়ন দেখা গেল।

বোমা নয়, শান্তি চাইঃ-

মহাযুদ্ধতোর কালে আবার দেখা দিল পৃথিবীতে অশান্তির কালো ছায়া। আমেরিকা রাশিয়া ব্রিটেন ফ্রান্স চীন পাঁচটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন রাষ্ট্রের খাস তখন নিউক্লিয়ার ক্লাবে। শেষে নাম লেখালো ভারত ও পাকিস্তান।

এই পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার যুগে যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সংঘটিত হয় তাহলে পৃথিবী থেকে মানবজাতি এবং মানব সভ্যতা একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

মানব দরদী লেখক গাবরিয়েল জার্সিয়া মার্কেট বলেছেন একটি বোমার কালান্তর বিস্ফোরণের মুহূর্তকালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।

সভ্যতার সকল স্বাক্ষর লুপ্ত করে এ জগত ফিরে যাবে তার সৃষ্টি কালের আদিম জমাট বরফের চোখে।

উপসংহারঃ- মানবতার প্রতি আবেদনঃ-

বহু যুগ আগে পঞ্চ দম্পতিকে আঘাত করতে অন্তত এক অস্ত্রধারী নিশাতকে কবি বাল্মিকী নিষেধ করেছিলেন, মা নিষাদ হত্যা নয় তেমনি পরমাণু অস্ত্র অন্তত জাতিগুলি দিকে তাকিয়ে এক কবি আহ্বান জানিয়েছেন যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।

পারমাণবিক বিস্ফোরণ ও বিশ্বশান্তি রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top