হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করবো আগত মাধ্যমিক /উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। যদি তোমরা অত্যন্ত যত্ন সহকারে প্রবন্ধ টি তৈরি করো তাহলে অবশ্যই তোমরা পরীক্ষায় ফুলমার্কস পাবে। সুতরাং সময় নষ্ট না করে দেখে নেওয়া যাক আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ টি।
ভূমিকাঃ-
আমরা যেখানে বাস করি তার পারিপার্শ্বিক পরিমণ্ডল কেই পরিবেশ বলে বৃক্ষ যেমন সজল মাটি,অবাধ আলো এবং উৎকৃষ্ট সার পেলে তবেই সতেজ ভাবে বেড়ে ওঠে ঠিক তেমনি আমাদের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠাটাও এই পরিবেশের উপর নির্ভরশীল আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই উৎকৃষ্ট পরিবেশ ের জন্য সুস্থ পরিবেশের প্রয়োজন আবশ্যক।
আইনগত দিকঃ-
ভারতীয় সংবিধানের ৫১ নম্বর ধারায় ভারতীয় নাগরিকদের ভারতীয় পরিবেশ রক্ষার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।ছাত্র-ছাত্রী ভারতীয় নাগরিক হিসাবে সেই দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আসলে লোক সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নাগরিকের চেতনা ব্যক্তিগত স্বার্থের অভিমুখে ধাবিত হয়। ফলে নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয় ব্যক্তিগত স্বার্থ দেখতে গিয়ে জাতীয় স্বার্থ তথা পরিবেশগত দায়বদ্ধতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।দেখা দিচ্ছে নানান দূষণ সেক্ষেত্রে সচেতন নাগরিক হিসাবে পরিবেশ রক্ষায় ও উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
পরিবেশ সচেতনতায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাঃ-
সচেতনতায় পারে যেকোনো উন্নয়নকে গতিশীল করতে।সেই উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীকে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সেজন্য যা করতে হবে তা হলঃ-
১/ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্বন্ধে নিজেদের সচেতন হওয়া।
২/জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে অবহিত হয়ে সে বিষয়ে প্রচার করা।
৩/সব রকম দূষণ ও তার কারণ সম্বন্ধে পারস্পরিক আলোচনা করে যথাসম্ভব তা বন্ধ করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ।
৪/ নিজেদের বাড়িতে প্রয়ঃপ্রণালী ঠিক রাখা।
৫/ যেসব কারণে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বিঘ্নিত হয় সেসব কাজ না করা।
৬/ আহার নিদ্রা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতন হওয়া সুষম খাদ্য সম্পর্কে চেতনা গড়ে তোলা।
৭/ অবৈজ্ঞানিক মানসিকতা ও কুসংস্কার দূরীকরণে সচেষ্ট হওয়া।
৮/ ঘর গৃহস্থালির বর্জ্য পদার্থ যেখানে সেখানে না ফেলে তা নিদিষ্ট জায়গায় ফেলা।
৯/ হাসপাতাল, নার্সিংহোম, স্কুল, কলেজ প্রভৃতি জায়গা সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
১০/ ধূমপান, মদ্যপান, ড্রাগ সেবন প্রভৃতি থেকে বিরত থাকা।
১১/স্কুল, কলেজ,রাস্তাঘাট, পার্ক, বাস,ট্রাম- ট্রেন প্রভৃতি জায়গায় খাবারের পরিত্যক্ত প্যাকেট না ফেলা।
১২/ বাড়ির সংলগ্ন পরিবেশের পক্ষে উপযোগী গাছ লাগানো ও পুরাতন গাছ না কাটা।
১৩/ রোগ প্রতিরোধে গাছপালার যে ভূমিকা আছে সেসব গাছপালা আমাদের পরমবন্ধু তা জেনে সবাইকে জানানো।
১৪/ এজন্য পরিবেশ সম্পর্কিত নানান তথ্য গণমাধ্যমে যাতে প্রচারিত হয় সে বিষয়ে জনশিক্ষার ব্যবস্থা যাতে গৃহীত হয় তা দেখা উচিৎ সরকারের। শুধু ছাত্রছাত্রীরা সচেতন হলে হবে না সেই সচেতনতা যাতে বিস্তৃত হয় সেজন্য দৃঢ় পদক্ষেপ ও কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে সরকারকে। এবং সেই সঙ্গে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন জনগণকেও সচেতন হতে হবে।
১৫/ তবে এ ব্যাপারে ছাত্রসমাজের ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনটাই তো সুন্দর -পবিত্র ও নির্মল। তারা নিয়মিতভাবে স্কুলের পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
তাই সামাজিক পরিবেশ রক্ষায় তাদের এগিয়ে আসতে হবে তারা যেমন হাতে কলমে পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে তেমনি নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তাদের সামনে নিজেরা কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।আলাপ আলোচনা করবে, পদযাত্রা করে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে।
ছাত্রছাত্রীরা প্রথমে তাদের গৃহ পরিবেশকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করবে তারপর তারা প্রতিবেশীদের পরিবেশকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করবে এইভাবে তারা বৃহত্তর সমাজে নিজেদের আদর্শের কথা ছড়িয়ে দিতে সমর্থ্য হবে। সমাজের সবচেয়ে সচেতন অংশ যে এই ছাত্রছাত্রীরাই তা দেখে অর্থাৎ তাদের আচার-আচরণ দেখে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং সুন্দর পরিবেশ গড়ে উঠবে।
উপসংহারঃ-
সুস্থ পরিবেশে মানুষের জীবনের যথার্থ বিকাশ ঘটে আর সেই পরিবেশই যদি দূষিত হয়ে পড়ে তবে মানুষের তথা জীবকুলের স্বাভাবিক কাজকর্ম গুলি নানা কারণে বন্ধ হয়ে যায়।এই দূষণের প্রভাব বর্তমান প্রজন্মেই সীমাবদ্ধ থাকে না এর প্রভাব সূদূরপ্রসারী তাই পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে মানবজাতির তথা ছাত্রসমাজের অবদানের আবশ্যিকতা রয়েছে।