নারী শিক্ষার ইতিহাস
নারীশিক্ষা প্রসারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সংক্ষেপে আলোচনা করো।
ভারতে নারী শিক্ষার ইতিহাস | নারী শিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান | Nari Shikkhar Etihas
ভূমিকাঃ- উনিশ শতকের বিখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত ও সমাজসংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১ খ্রি.)। নারীমুক্তির উদ্দেশ্যে সারাজীবন ধরে শিক্ষাবিস্তার ও সমাজসংস্কারে সচেষ্ট হয়েছিলেন।
প্রেক্ষাপটঃ-
নারীশিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগরের লক্ষ্য ছিল দুটি, যথা—
প্রথমতঃ- বিদ্যাসাগর বিধবাবিবাহ প্রবর্তন,বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রোধ, এবং বিভিন্ন সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে তোলার পাশাপাশি অনুভব করেন নারী মুক্তির জন্য প্রয়োজন নারীশিক্ষা।
দ্বিতীয়তঃ- নারীকে শিক্ষিত করে তোলা সম্ভব হলে পরবর্তী প্রজন্মও শিক্ষিত হয়ে উঠবে বলে তিনি বিশ্বাস করতেন।
Read More – ছোটদের কুইজ | 100+ সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর | GK কুইজ 2022
নারীশিক্ষা বিস্তারে অবদানঃ-
(ক) স্কুল প্রতিষ্ঠাঃ-
বিদ্যাসাগর বিদ্যালয় দক্ষিণবঙ্গের পরিদর্শকের সরকারি পদে থাকার (১৮৫৭-৫৮ খ্রি.) সুযোগে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় এবং ১০০টি বাংলা স্কুল স্থাপন করেন। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে বেথুন সাহেবের উদ্যোগে ‘হিন্দু ফিমেল স্কুল’ প্রতিষ্ঠাকালে তিনি বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন।
(খ) ভগবতী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাঃ-
বিদ্যাসাগর তাঁর নিজের জন্মস্থান মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে মা ভগবতী দেবীর পুণ্য স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিষ্ঠা করেন ভগবতী বিদ্যালয় (১৮৯০ খ্রি.)।
(গ) নারী শিক্ষা ভাণ্ডারঃ-
তাঁর প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়গুলিকে সরকার আর্থিক সাহায্যদান বন্ধ করলে বিদ্যাসাগর ‘নারীশিক্ষা ভাণ্ডার’ নামে একটি তহবিল গঠন করেছিলেন।
(ঘ) স্ত্রী শিক্ষা সম্মিলনীঃ-
বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার যথাযথ প্রসারের জন্য মেদিনীপুর, হুগলি, বর্ধমানসহ বিভিন্ন জেলায় ‘স্ত্রীশিক্ষা সম্মিলনী’ নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
উপসংহারঃ-
বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার প্রসার ও নারী সমাজের উন্নতির জন্য যুক্তির চেয়ে হিন্দু ধর্মশাস্ত্রের ওপর বেশি নির্ভর করেন। তাই ঐতিহাসিক অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে ‘ঐতিহ্যবাহী
আধুনিককার’ বলে অভিহিত করেছেন।