মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল রচনা [Mobile Baboharer Sufol Kufol]

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল রচনা [Mobile Baboharer Sufol Kufol]

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল রচনা [Mobile Baboharer Sufol Kufol]

ভূমিকাঃ-

বিবর্তনের সোপান বেয়ে আসে সভ্যতা। সভ্যতা হচ্ছে মানবজাতির বুদ্ধি,মেধা ও অভিজ্ঞতার সমষ্টি।এই রহস্যময় পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে নানা বিষ্ময়কর জিনিস।যার মধ্যে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিষ্ময়কর আবিষ্কার মোবাইল ফোন। যাকে ছাড়া বর্তমান সময়ের মানুষ অচল।

মোবাইল ফোন কি?

মোবাইল ফোন বা সেলুলার ফোন বা হ্যাণ্ড ফোন হচ্ছে তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ। ‘MOBILE’ একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে ‘ভ্রাম্যমান’ বা ‘স্থানান্তর যোগ্য’।

মোবাইল ফোন অতি সহজেই যততত্র নিয়ে যাওয়া যায় তার নাম এইরুপ।মূলত মোবাইল ফোন একটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রবিশেষ।

এটি বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে কাজ করে যেকারণে এটি অনেক বড় ভৌগোলিক এলাকায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে। এর মাধ্যমে শুধু কথা বলা নয় একাধিক পরিষেবা গ্রহণ করা যায় যেমন SMS,E.MAIL,INTERNET,BLUETOOTH ইত্যাদি।

মোবাইল ফোনের আবিষ্কারঃ-

সেলুলার ফোন প্রাথমিকভাবে জাহাজ ও ট্রেনে এনালগ রেডিও কমিউনিকেশন হিসেবে ব্যবহার হতো।মোবাইল ফোনের আবিষ্কর্তা হলেন ড.মার্টিন কুপার।তিনি ১৯৭৩ সালে ৩ এপ্রিল সফলভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন।পরবর্তী অর্থাৎ ১৯৮৩ সালে সর্বপ্রথম মোবাইল বাজারে আসে।ফোন টির নাম ছিল মোটোরোলা ডায়না ‘TS 800X’

মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয়তাঃ-

বর্তমান যুগ বিজ্ঞানময় যুগ।বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে দেশে বিদেশে যোগাযোগসহ শিক্ষা,সংস্কৃতি,আচার ব্যবহার ইত্যাদির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী। বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া বর্তমান মানবজীবন কল্পনা করাই যায়না।এককথায় মোবাইল ফোন বিশ্বকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এনে দিয়েছে।

যোগাযোগের মাধ্যমঃ-

সুষ্ঠুভাবে জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য শর্ত হলো যোগাযোগ মাধ্যম। আর যোগাযোগের অন্যতম দ্রুত মাধ্যম হলো মোবাইল ফোন।এর মাধ্যমে আমার দূরের স্থানের মানুষের খবরাখবর পেতে পারি।

ইন্টারনেট ব্যবহারঃ-

বর্তমান বিশ্বকে বিশ্ব গ্রামে পরিণত করেছে এই ইন্টারনেট ব্যবস্থা।মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইমেইল সহ বিশ্বের যেকোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।এছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করতে পারি।

চিত্তবিনোদনের মাধ্যমঃ-

বর্তমান সময়ে আমরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে ছবি বা যেকোনো ঘটনা বা অফিস আদালতের সার্কুলার,মেমো ইত্যাদি পৌঁছাতে পারি।এছাড়াও মোবাইল ফোনে গান শোনা,ভিডিও দেখা,ছবি তোলা,গেম খেলা ইত্যাদি করে থাকি।

বিবিধ সেবা প্রদানঃ-

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও বিভিন্ন অপারেটর কর্তৃক স্বাস্থ্য সেবা,কৃষি সেবা ইত্যাদি প্রদান করা হয় যা জনসাধারণকে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনে সহায়তা করে।এছাড়াও রেডিও,টেলিভিশন থেকে শুরু করে ইমেইল,ইন্টারনেট প্রভৃতি প্রদান করা হয়।

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকসমূহঃ-

মোবাইল ফোনের ব্যবহার সভ্য জীবনের একটা অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠলেও এর ক্ষতিকর দিক একাধিক। মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলা বা ব্যবহার মোটেই ঠিক না।

বর্তমান সময়ে আট থেকে আশি সব বয়সের মানুষ ই মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে যেটা একেবারেই অনভিপ্রেত। এই বিষয়ে তাদের অবশ্যই সচেতন করতে হবে।

এছাড়া বতর্মান সময়ে ফোনে অনর্থক কথা বলা,এস.এম.এস করা,গেম খেলা নানা ধরনের পর্ণ দেখায় লিপ্ত যুবক যুবতীরা।এটি নেশার মতো যুবসমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে।

উপসংহারঃ-

পরিশেষে বলা যায় মোবাইল ফোন বর্তমান বিশ্বের আশীর্বাদ। যদিও এর একাধিক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।তবুও সঠিকভাবে ব্যবহার করলে নিশ্চিতরূপে আমাদের মঙ্গল ডেকে আনবে।

মোবাইল ফোনের ইতিবাচক ব্যবহারই উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।অতএব মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার আমাদের নিশ্চিত করতেই হবে।

Leave a Comment