গাছ আমাদের বন্ধু রচনা (Gach Amader Bondhu Essay)

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা(Gach Amader Bondhu Rachana)

ভূমিকাঃ-

আমরা সকলেই একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে বাস করি। পরিবেশ গঠিত হয় জীব এবং জড় নিয়ে। আবার জীবকুল দুটি ভাগে বিভক্ত যথা প্রাণী এবং উদ্ভিদ।

প্রাণীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মানুষ কিন্তু তাহলেও মানুষকে অন্যান্য জীবের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হয়।যার ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উভয় ভাবেই জীবকুল সব থেকে বেশি নির্ভরশীল তা হল গাছ।

আমাদের জীবনে গাছের উপকারিতাঃ-

মানুষ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারেনা। শুধুমাত্র মানুষই নয় সৃষ্টির কোন প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারেনা একমাত্র যে খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে তাহলে উদ্ভিদ।

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা (Gach Amader Bondhu Rachana)

তার দেহের ক্লোরোফিল যুক্ত সবুজ অংশে জল,খনিজ এবং সূর্যালোকের সাহায্যে শর্করা যুক্ত খাদ্য তৈরি করে আর অন্যান্য প্রাণী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদকেই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে অতএব আমাদের সকল খাদ্যের মূল উৎস হলো উদ্ভিদ।

খাদ্য ছাড়াও আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো অক্সিজেন যা আমরা গাছ থেকেই পেয়ে থাকি।গাছ সূর্যালোকের সাহায্যে খাদ্য তৈরি করার সময় বাতাসে অক্সিজেন গ্যাস ত্যাগ করে যা জীবকুলের জীবন ধারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস যা শ্বাসকার্য চালানোর জন্য জরুরী ।

আমরা প্রশ্বাসের সঙ্গে অক্সিজেন এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ত্যাগ করি আর এই কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির সময় তা গ্রহণ করে এবং বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ঠিক এভাবেই আমাদের পরিবেশকে নির্মল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

শুধু অক্সিজেন নয় গাছ প্রাণীদের আরও নানা উপায়ে সহযোগিতা করে।গাছ থেকে মানুষ পায় যা থেকে তৈরি করে আসবাবপত্র যেমন টেবিল,চেয়ার,বেঞ্চ, আলমারি, দরজা- জানলা ইত্যাদি এছাড়াও গাছের শুকনো ডাল মানুষ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে।

গাছ থেকে মানুষ ফুল ফল পায় গাছের বিভিন্ন অংশ যেমন শিকড়- ডালপালা -পাতা ইত্যাদি থেকে অনেক জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি হয়। গাছপালা জরিবুটি ইত্যাদি দিয়ে বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা করা হয়।

গাছের শিকড় মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে রাখে যে কারণে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ হয়।পুরনো দিনে গ্রীষ্মকালে পথিকজন গাছের তলায় আশ্রয় নিতেন এবং গ্রীষ্মের সূর্যের প্রখরতার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতেন।

গাছ আবহাওয়াকে ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। খাদ্য তৈরীর সময় গাছ পরিবেশে যে জলীয় বাষ্প ত্যাগ করে তা বৃষ্টি হতে সাহায্য করে। শব্দদূষণের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে গাছ।

উপসংহারঃ-

গাছের এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও মানুষ দিনের পর দিন নির্বিচারে গাছ কেটেই চলেছে। ফলস্বরূপ বাস্তুতন্ত্র তার ভাবসাম্য হারিয়ে ফেলছে।পৃথিবী ক্রমশই উষ্ণ থেকে আরও উষ্ণতর হয়ে পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন আমাদের এই বিশাল পৃথিবী বিশাল মরুভূমিতে রূপান্তরিত হবে।

তাই আমাদের সকলের এখনই সচেতন হওয়া দরকার। উদ্ভিদকুল কে রক্ষা করতে গেলে বিভিন্ন রকম কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যালয় থেকে শুরু করে সামাজিক স্তরেও বনসৃজন করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বৃক্ষছেদন করা যাবে না।।

খুব প্রয়োজনে যদি গাছ কাটা প্রয়োজন হয় তাহলে শুধুমাত্র বড় গাছ কাটতে হবে আর তার পরিবর্তে দশটি নতুন চারা লাগাতে হবে। আমাদের স্মরণে রাখতে হবে ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’।

Leave a Comment