দেশভ্রমণের উপযোগিতা প্রবন্ধ রচনা [Desh Vromoner Upojogita Essay] – আমার প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা এই আর্টিকেলে আমি তোমাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ শেয়ার করছি।প্রবন্ধটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যত্ন নিয়ে পড়ে পরীক্ষার জন্য তৈরি করো।তুমি যদি ঠিক এইভাবেই প্রবন্ধটি ফুটিয়ে তুলতে পারো তাহলে অবশ্যই তুমি ফুলমার্কস পাবে।তাহলে চলো আর দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক প্রবন্ধটি।
ভূমিকাঃ-
ঘর আর পথ এ নিয়েই মানুষের জীবন। তাই ঘরে থাকতে থাকতে মানুষের মন হাঁফিয়ে উঠলে সে পথে নামতে চায়। মন চলে যায় দূরে,সুদূরতায় হারিয়ে যেতে যেতেও মন জেনে নেয় পৃথিবীর নানা গোপন কথা, অচেনা -অজানা রহস্য। দীর্ঘজীবনের প্রান্তভূমিতে দাঁড়িয়ে আমাদের মন পেতে চায় পৃথিবীর নানা প্রান্তে।
আসলে পৃথিবীটা অনেক অনেক বড়। অথচ এই পৃথিবীতে দীর্ঘদিন বাস করেও আমরা একবারের জন্যও পথে নামলাম না, দেখলাম না চোখ মেলে কত না শহর- নগর রাজধানী, কত না মরুপ্রান্তর- বরফচূড়া -শ্যামল বনান্তর। অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না।
পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও কিন্তু ছিল পথিক মানুষ,যাযাবর মানুষ তখন নতুন নতুন বাসভূমির সন্ধানে অরণ্য পর্বতে ঘুরে ঘুরে বেড়াত। অর্থাৎ জন্মসূত্রেই এই পৃথিবীর মানুষ সুদূরের পিয়াসী। ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুভূতিতে পূর্ণতার স্বাদ এনে দেয়।
দেশভ্রমণ ও শিক্ষাঃ-
পুথিপোড় জগতের মানুষের জীবনের অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে তোলে দেশভ্রমণ। অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের জগৎ তখন চিত্ররূপময় হয়ে ওঠে। প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ, সভ্যতা,সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক প্রকৃতি, ভ্রমণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় যেন মৃন্ময়ী হয়ে ওঠে।
ভ্রমণে মুক্তিঃ-
গণ্ডিবদ্ধ জীবন আমাদের মনের বিস্তার কে খন্ডিত করে।জীর্ণ লোকাচার প্রতিদিন আমাদের বেঁধে ফেলে। সেই জীর্ণ লোকাচার কূপমণ্ডুকতা থেকে ভ্রমণ মনকে মুক্তি দেয়। মানুষের মানসিক – সামাজিক- সাংস্কৃতিক বিকাশ ভ্রমণ ত্বরান্বিত করে। মানুষকে করে তোলে মুক্তমনা।
ভ্রমণ-সেকালে একালেঃ-
প্রাচীনকাল থেকেই অনিশ্চয়তাকে সঙ্গে নিয়ে মানুষ একদিন পথ চলা শুরু করেছিল। ফা-হিয়েন, ইবন বতুতা, হিউয়েন সাঙ থেকে শুরু করে কলম্বাস, ভাস্কো-দা-গামা এভাবেই ভারতবর্ষে এসেছেন। ভারতবর্ষের সংবাদ পৌঁছে দিয়েছেন সুদূর পাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে। সেকালের পথচলার সমস্যা পদে পদে বিপদ আর আতঙ্ক আজ আর নেই। অবশ্য তাতে পথ চলার অ্যাডভেঞ্চার অনেকটাই কমে এসেছে।
শিক্ষা অর্জনে ভ্রমণঃ-
ভ্রমণের মাধ্যমেই শিক্ষা পূর্ণতা পায় -একথা একালের শিক্ষাবিদেরা সকলেই মনে করেন। একালে তাই বিশেষজ্ঞদের এই মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যালয় বা কলেজ -বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষামূলক ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এমনকি এ বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে সরকারও অনুদান দিয়ে থাকে।
উপসংহারঃ-
ভ্রমণে প্রানের সঙ্গে প্রাণের মিলন ঘটে। নতুন জীবনদৃষ্টি আর জীবনীশক্তি দেয় ভ্রমণ। ভ্রমণকে কেন্দ্র করে নানা দেশে আজ কাজ গড়ে উঠেছে পর্যটন শিল্প। এতে বৈদেশিক মুদ্রাও দেশের ঘরে আসে। এই সূত্রে বহু মানুষ বেঁচে থাকার মত কাজও খুঁজে পায়। তাই একালে দেশ ভ্রমণ হয়ে উঠেছে জীবিকা অর্জনের হাতিয়ার।