ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি।

বাঙালি ভ্রমন প্রিয় মানুষে, ভ্রমন করতে, ভ্রমন নিয়ে আলোচনা করতে অথবা ভ্রমনের অভিজ্ঞাতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লিখতে বললে বসলে হয়তো, খাতার পাতার শেষ হবে কিন্তু চিঠি শেষ হবেনা।

বেশ ভালই হয়েছে আজ আমাদের পড়ার বিষয়ের মধ্যে বাংলা চিঠি বিষয়ক একটি অধ্যায় রাখা হয়েছে। নাহলে এই আধুনিক যুগে ফোন, WhatsApp, Instagram, Facebook er মতো সামাজিক যোগাযোগ ব্যাস্ততার ব্যবহারে হয়তো চিঠির ব্যাপারটা ছাত্র ছাত্রীরা ভুলেই যেত। মানছি চিঠির চলাচল এখন আর তেমন নেই, কিন্তূ এই কয়েক যুগ আগেই তো চিঠি ছিল এক মাত্র যোগাজক ব্যবস্থা মাধ্যম। আমরা ইতিহাস বইয়ে পড়েছি এক রাজা অন্য রাজাকে চিঠির মাধ্যমে খবরআ খবর জানতেন। সাধারণ মানুষও তার প্রিয়, ভালোবাসার মানুষদের সুখে, সুখে, বিপদে আপদে চিঠি লিখতেন।

বর্তমান সময়ে চিঠি

বর্তমান সময়ে চিঠির প্রাই চলন একেবারেই নেই বললেই চলে, তবুও অফিস, আদালতে, চাকরির পরীক্ষার আবেদনে, আরো বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে চিঠি লিখতে হয় বৈকি। তাই চিঠি ব্যাপার টা জেনে নেওয়া জাক। যেটা খুবই সহজ।

ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি

চিঠির আবার অনেক রক্ষমের ধরন আছে। এই যেমন:-

  1. বন্ধুকে চিঠি লেখা।
  2. স্কুলে ছুটি চেয়ে প্রধান শিক্ষককে চিঠি লেখা।
  3. থানায় অভিযোক জানতে চিঠি লেখা
  4. গ্রামের প্রধান মহাশয়কে আবেদন করে চিঠি লেখা।

আজ আমরা দেখবো বন্ধুকে চিঠি লেখার নিয়ম এবং পদ্ধতি। বন্ধু বান্ধব, বাবা মা, ভাই বোন আত্মীয় সজনকে চিঠি লেখার ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

বন্ধুকে চিঠি লেখার নিয়মাবী:

  • চিঠিতে বন্ধুকে তুই অথবা তুমি বলে সম্মধন করেতে পারো।
  • খাতার বাম দিকে উপরের দিকে নিজের ঠিকানা লিখতে হয়, এবং তারিখ লিখতে হয় ।
  • ঠিকানা লেখা শেষ হলে, একটু ছেড়ে দিয়ে, প্রিয়, বন্ধু, সখা, প্রিয় বন্ধু, প্রিয় বন্ধুর নাম, লিখতে হয়।
  • তার নিচে বাম দিক থেকে চিঠি লেখা শুরু করতে হয়।
  • চিঠি লেখা শেষ হলে দান দিকে ইতি, তোমার নাম লিখতে হয়।
  • অবশেষে বাম দিকে, একদম নিচে, যাকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে তার বাবার নাম, তার নাম (বন্ধুর নাম) আর তার সম্পূর্ণ ঠিকানা লিখতে হয়।

তাচলে চলুন দেখাযাক বন্ধুকে কিভাবে চিঠি লেখা হয়। এখানে আমি তিনটে আলাদা আলাদা চিঠি দিলাম। যার যেটা সহজ মনে হবে সেটা মুখস্ত করতে করে নেবেন।


১ চিঠি: ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি।

[তোমার নিজের ঠিকানা]
কলকাতা, ৭০০০১২
তাং ১৫.০৯.২০০২৩
প্রিয় রাকেশ,
বন্ধু কেমন আছো? অনেকদিন হলো তোমার কোনো চিঠি নেই, খবর নেই, আসা করবো তুমি আর তোমার পরিবারের সকলে খুব ভালো আছো। এদিকে আমরা বেশ ভালই ছিলাম আর একজন আরো ভালো আছি। কারণ আমি এই দুদিন হলো ভ্রমন থেকে ফিরলাম। তোমরা আগের বছর গরমের ছুটিতে যখন এসেছিলে তখন তোমার দীঘা ভ্রমণের গল্পঃ শুনিয়েছিলে। আর বলেছিলে চব্বিশ পরগনার বক্ষালি জায়গাটাতে তোমার যাবার খুব ইচ্ছা। জানো আমি এই ২ দিন হলো দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বক্ষালীতে ঘুরে এলাম। সে এক বিশাল ভ্রমন অভিজ্ঞতা। তাই আর তোমাকে চিঠি না লিখে থাকতে পারলাম না।

এমন ভ্রমন অভিজ্ঞতা আমার জীবনে আর কখনো হয়নি। তোমাকে হয়তো চিঠিতে সবটা বলে বোঝাতে পারবোনা। আমরা প্রায় দুপুর ৩ তের সময় বাবার ৪ চাকা গাড়ি করে বেরিয়ে পড়েছিলাম। আমার অজানা সেই বক্ষালীর দিকে। যখন গিয়ে পৌঁছালাম তখন প্রায় সন্ধ্যা ৫ টা বাজবে, সন্ধায় বক্ষালির সুমুদ্র সৈকতে, সূর্যের অস্ত্র যাওয়ার যে অপরুপ দৃশ্য সে তোমাকে বুঝাতে পারবোনা, পরের দিন আমরা গিয়াছিলাম হেনরি আইল্যান্ড, মোহনা, মোহনায় বড়ো বড়ো জাহাজ আর নৌকার সারি দেখতে বেশ লাগছিল, তার পর নৌকা করে আমরা চলে গিয়েছিল সমুদ্রের মাঝে অবস্থিত সবুজ দ্বীপের নিকটে সেখানে নাকি এক সময় মানুষ বাস করত, কিন্তু এখন আছে শুধু কিছু বন্য জন্তু আর পশুপাখি। সরকার থেকে দ্বীপে নামার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সুতরাং আমাদের একটু দূর থেকেই দ্বীপ দেখে ফিরে আসতে হলো। এছাড়া পরের দিন আমরা নিকটবর্তী একটি পশু সংরক্ষণ কেন্দে গিয়াছিলাম, দেখানে হরিণ, বাঘ, রংবে রঙের পাখি, জলের কুমির, বানর, ভল্লুক, গন্ডার আরো অনেক কিছু দেখেছি। সব থেকে ভালো লেগেছিলো সকালের সূর্যোদয়। সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে সূর্য উদয় হওয়ার সে কি অপরুপ দৃশ্য। মনে হচ্ছিল সূর্য মহাশয় যেনো সমুদের জল ভেদ করে উপরের দিকে উঠে আসছে আমাদেরই জন্য।

বেড়াতে গিয়ে তোমার কথা খুব মনে আসছিল। ভাবছিলাম তুমি সঙ্গে থাকতে তাহলে এই আনন্দও দ্বিগুণ হতো নিশ্চিত। তাই বাড়ি ফিরেই তোমাকে চিঠি লিখতে বসে পড়লাম। যাইহোক যদি আবার কখনো সুযোগ হয় তুমি আর আমি বক্ষালী বাড়াতে যাবো। তুমি এই বিগত একবছরে কোথায় কোথায় ঘুরলে অবশ্যই চিঠিতে জমিও। কাকু, কাকিমাকে আমার প্রণাম জানিও। তোমার চিঠির আসায় থাকবো।
ইতি,
তোমার প্রিয় বন্ধু রকিব
[প্রাপক অর্থাত্ যাকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে তার ঠিকানা / তোমার বন্ধুর ঠিকানা]
বাবা: রাজেশ ব্যানার্জী
বন্ধু: রাকেশ ব্যানার্জী
পুরুলিয়া, বাঘমুন্ডি, স্টেশন বাজার ২
পুরুলিয়া, ওয়েস্ট বেঙ্গল
পিন ৭২৩১৫২

Leave a Comment