আজানের সময় এবং আজানের পর যা যা করণীয়।

আজানের জবাব ও দোয়া

আজান শুনলে, মুয়াজ্জিন যা বলেন, তা-ই মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে এবং তার কথার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। তবে মুয়াজ্জিন যখন “হাইয়া আলাস সালাহ” এবং “হাইয়া আলাল ফালাহ” বলেন, তখন উত্তর হবে:-

আজানের সময় এবং আজানের পর যা যা করণীয়।

উত্তর:
“লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি আলিয়্যিল আযীম।”
(অর্থ: শক্তি ও ক্ষমতা কেবল মহান ও মহীয়ান আল্লাহরই।)

আজানের পরে পড়ার দোয়া:

আজান শেষ হলে নিচের দোয়াটি পড়া উত্তম:

দোয়া:
“আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ্‌ দা’ওয়াতিত্‌ তাম্মাহ, ওয়াস সালাতিল কায়িমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদীলাহ, ওয়াবআসহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাযি ওয়াআদতাহ।”

অর্থ:
হে আল্লাহ! এই পূর্ণ আহ্বানের এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের প্রভু, মুহাম্মাদ (সা.)-কে ওসিলা এবং মর্যাদা দান করুন এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দিন যা আপনি তাঁর জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ফজিলত:
আজানের জবাব দিলে ও দোয়া পড়লে আল্লাহর কাছে বিশেষ সওয়াব লাভ হয়। এটি আমাদের দোয়া কবুলের একটি সময়।

ফজরের আজানের জবাব

ফজরের আজানের জবাব অন্যান্য আজানের মতোই দেওয়া হয়। তবে ফজরের আজানে মুয়াজ্জিন ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান-নাউম’ উচ্চারণ করেন। এর জবাবে বলতে হয়:
‘সাদাকতা ওয়া বারর্তা’ অর্থাৎ, “আপনি সত্য বলেছেন এবং সঠিক বলেছেন।”


আজানের জবাব

আজানের প্রতিটি বাক্যের জবাব এভাবে দিতে হয়:

  1. আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
    জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
  2. আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
    জবাব: আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
  3. আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
    জবাব: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ।
  4. হাইয়্যা আলাস-সলাহ
    জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
  5. হাইয়্যা আলাল-ফালাহ
    জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।
  6. আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
    জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
  7. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ
    জবাব: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

আজানের দোয়া

আজান শেষ হওয়ার পর এই দোয়া পড়া উত্তম:
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ্ দা‘ওয়াতিত তা‘ম্মাহ, ওয়াস্ সালাতিল কা‘ইমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাহ, ওয়াব‘আছহু মাক্বামাম মাহমূদানিল্লাযি ওয়াআ‘দতাহ।
অর্থ:
“হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বানের এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব! মুহাম্মাদ (সা.)-কে ওয়াসিলা ও ফযিলত দান করুন এবং তাঁকে সেই প্রশংসিত স্থানে পৌঁছে দিন যার প্রতিশ্রুতি আপনি দিয়েছেন।”


আযানের দোয়া বাংলা অর্থসহ

উপরে দেওয়া দোয়ার অর্থই হলো আযানের দোয়া বাংলায়। এর মাধ্যমে আমরা নবী করিম (সা.)-এর জন্য সুপারিশ কামনা করি।


আজানের জবাব বাংলা

আজানের জবাব বাংলায় দিলে অর্থ এভাবে হয়:

  1. আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান।
  2. আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
  3. আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল
  4. নামাজের জন্য আসো। (উত্তর: কোনো শক্তি বা ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া নেই।)
  5. সফলতার জন্য আসো। (উত্তর: কোনো শক্তি বা ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া নেই।)

আজানের জবাব কিভাবে দিবো

আজানের জবাব মুয়াজ্জিনের উচ্চারিত প্রতিটি বাক্যের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে দেওয়া হয়। এছাড়া ফজরের আজানে ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান-নাউম’-এর জবাবে আলাদা উত্তর দিতে হয়।


আজানের জবাব না দিলে কি গুনাহ হবে?

আজানের জবাব দেওয়া সুন্নত। এটি না দিলে গুনাহ হবে না, তবে একটি সুন্নত পালনের সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া যাবে।


আজানের পর দোয়া

আজানের পরে উপরে উল্লেখিত দোয়া পড়তে হয়। এটি পড়লে নবী করিম (সা.)-এর সুপারিশ পাওয়া যায় এবং আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ মর্যাদা অর্জিত হয়।

উপদেশ:

আজানের সময় অন্যান্য কাজ বন্ধ করে মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং যথাযথভাবে জবাব দিন। আল্লাহর রহমত ও বরকত অর্জনের জন্য এই আমল গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Don`t copy text!