শীতের সকাল প্রবন্ধ রচনা [Siter Sakal Essay]

শীতের সকাল প্রবন্ধ রচনা [Siter Sakal Essay] – সাধারণত আজকের আর্টিকেলটি ‘শীতের সকাল’কে কেন্দ্র করে লেখা। যে সমস্ত শিক্ষার্থী শীতের সকাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই তাদের জন্যে এটি একটি দারুণ নোট।তাহলে চলো বন্ধুরা দেখে নেওয়া যাক ‘শীতের সকাল’ প্রবন্ধটি।

শীতের সকাল প্রবন্ধ রচনা [Siter Sakal Essay]

ভূমিকাঃ-

পৌষ ও মাঘ এই দুই মাসের সমন্বয়ে শীতকাল। যদিও শীত এই দুই মাস এর আগেই শুরু হয় এবং এই দুই মাসের পরেও থাকে। তবে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে আমরা এই দুই মাস কেই অর্থাৎ পৌষ ও মাঘ মাসকে শীতকাল বলে থাকি। সাধারণত শীতের তীব্রতা এই দুই মাস বেশি থাকে। প্রকৃতপক্ষে শীতের আগমন শুরু হয় অঘ্রাণ মাসের প্রথম দিকে এবং পৌষের শেষের দিকে শীতের প্রকোপ তীব্র হয়ে উঠলেও ফাল্গুন মাস পর্যন্ত শীতের আমেজ থেকেই যায় আর সাধারণত এই সময় পল্লী প্রকৃতির বুকে ফসল কাটা চলে এবং চারিদিকে একটি উৎসবমুখর পরিবেশের আমেজ থাকে।

শীতের সকালের বর্ণনাঃ-

শীতের সকাল মানেই ঘন কুয়াশায় প্রকৃতিকে ঢেকে ফেলা। আর তীব্র কনকনে অর্থাৎ হাড় কাঁপানো ঠান্ডা সেই সময় মানুষজন একেবারে যবুথবু হয়ে বসে থাকে। ঘন কুয়াশার চাদরের ফাঁক দিয়ে শীত উঁকি মেরে ঘোষণা দেয় সে তার হিমশীতল আগমনী বার্তা নিয়ে হাজির। প্রকৃতির মধ্যে সর্বত্র দেখা যায় শুষ্কতার জমজমাট রেশ ও চিহ্ন। শীতকালে প্রকৃতি তার রূপ- রস- বর্ণ সবকিছুই ঝেড়ে ফেলে দিয়ে যেন সন্ন্যাস ব্রত পালনে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। পাশাপাশি পশুপাখি সহ জীবজন্তুর জীবন হয়ে ওঠে পান্ডু বিবর্ণ।

এরই মাঝে প্রকৃতি সেজে ওঠে এক অপূর্ব সাজে সচরাচর শীতের রাত অত্যন্ত দীর্ঘ যেন শেষ হতেই চায় না তাই ভোর হতে না হতে হতেই পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজে পল্লী প্রকৃতি মুখরিত হয়ে ওঠে। তারই ফাঁকে একটু মিষ্টি মধুর আরামদায়ক সূর্যালোকের পরশের জন্য মানুষের ছোটাছুটি লেগে যায়।কিন্তু শীতের কুয়াশার ঘন প্রাচীর ভেদ করে সূর্যালোককে প্রচুর বেগ প্রয়োগ করে প্রকৃতির বুকে আসতে হয়।

শীতে যে শুধু পশু- পাখি ভোগে তা কিন্তু নয় পাশাপাশি গরিব,আর্ত,পীড়িত,দুঃস্থ মানুষগুলো যথেষ্ট কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করে। বয়স্ক মানুষজন শীতের সকালে হাড় কাঁপানো শীতের হাত থেকে একটু পরিত্রান পাওয়ার আশায় আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে আগুন পোহায়।এই সময় অর্থাৎ শীতের সকালে নানা ধরনের খেলাধুলায় মেতে ওঠে ছোট্ট বাচ্ছারা। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি খেজুরের রস সহ নানা রকম পিঠা বানানো।

এ সমস্ত কাজগুলো হয়ে থাকে শীতের সকালে সকালের খাবার হিসেবে অধিকাংশ মানুষই এ সময় নানারকম পিঠে পুলি খেয়ে থাকে। গাছপালা ফসলাদি সব শিশিরের দ্বারা ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে।এ সময় পল্লী প্রকৃতির বুকে হাঁটাহাঁটি করলে পা গুলো যেন প্রচন্ড ঠান্ডায় কনকন করে ওঠে। সামগ্রিকভাবে যদি বলা হয় তাহলে শীতের সকাল অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার একটি অমূল্য দান

শীতের খাবারঃ-

শীত মানেই খেজুরের রস দিয়ে বানানো নানা জাতের পিঠা।পিঠাপুলির নানা সম্ভারে ভরে ওঠে গ্রাম বাংলা। গাঁয়ের প্রতিটি ঘরে ঘরে সকাল হওয়ার সাথে সাথে নানা জাতের পিঠা বানানো শুরু হয়। মেয়েরা তাদের কুশলতার পরিচয় দিয়ে রস পিঠা, তেলের পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতল পিঠা, পাটিসাপটা,ঝাল পিঠা এরকম নানা রকমের পিঠা তারা বানিয়ে ফেলে।

উপসংহারঃ-

সময় নদীর স্রোতের মত বয়ে যায়। খুব জলদি সকাল ফুরিয়ে আসে দুপুর। শীতের ছোট্টবেলায় দুপুর শেষ না হতে হতেই নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। তখন আবার এক রোদ ঝলমলে সোনালী সকালের প্রতীক্ষায় আমরা অপেক্ষারত। প্রত্যেক ঋতুর সকালের ভিন্ন ভিন্ন রূপ রয়েছে তাদের। শীতের সকাল অন্য সব ঋতুর চেয়ে সেরা বলা না গেলেও কিন্তু শীতের সকালের যে অনন্য একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা অনস্বীকার্য।

Leave a Comment