মহাফেজখানা কী? এর গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তর) মহাফেজখানা – সরকারি নথিপত্র সংরক্ষণকেন্দ্র মহাফেজখানা বা লেখ্যাগার বা আর্কাইভস নামে পরিচিত। এখানে সাধারণ ও গোপন নথিপত্র (পুলিশ, গোয়েন্দা ও স্বরাষ্ট্র বিভাগের) থাকে। স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় সরকারের নথি সংরক্ষণাগার রূপে দিল্লিতে গড়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় মহাফেজখানা এবং রাজ্যস্তরে রাজ্য-মহাফেজখানা।ভারতের স্বদেশি আন্দোলন, অসহযোগ, আইন অমান্য ও ভারত ছাড়ো আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনের প্রাথমিক উপাদান মহাফেজখানায় রয়েছে।

মহাফেজখানার গুরুত্বঃ-

মহাফেজখানার গুরুত্ব অপরিসীম তা নিম্মে বর্ণনা করা হলো.

মহাফেজখানা কী? এর গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তরঃ-

যে-কোনো দেশের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সরকারি নথিপত্রের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি মহাফেজখানা (Record room) বা লেখ্যাগারে (Archieve) সংরক্ষিত এইসব নথি থেকে ঐতিহাসিক বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।

মহাফেজখানা থেকে প্রাপ্ত ইতিহাসঃ-

১/সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সচিব ও আধিকারিকরা সরকারি কাজকর্ম নিয়ে বিভিন্ন চিঠিপত্র লেখালেখি করেন ও নোট দেন।

২/সরকারি মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারে সংরক্ষিত এইসব নথি থেকে সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। একইভাবে বিভিন্ন ঘটনা সম্বন্ধেও নানা গোপন তথ্য পাওয়া যায়, যার উপর নির্ভর করে ঘটনার বিনির্মাণ করাও সম্ভব।

মহাফেজখানায় সংরক্ষিত নথিপত্র ইতিহাস গবেষণার জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মহাবিদ্রোহের সময়কালীন কোম্পানির প্রতিবেদন,সরকারি আধিকারিকদের চিঠিপত্র ডায়েরি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

ভারতের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে বা বিদ্রোহ দমনে সরকারি স্তরে অনেক কমিশন এবং রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল। যেগুলি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ হান্টার কমিশন থেকে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সংখ্যালঘুদের অবস্থা সম্বন্ধে জানতে পারি। অন্যদিকে জে.পি গ্রান্ট নিযুক্ত নীল কমিশন রিপোর্টে নীলচাষ কিভাবে বাংলার কৃষি, অর্থনীতির ওপর আঘাত এনেছিল তা জানতে পারি।

আবার বীরভূম, বাঁকুড়া মেদিনীপুর এলাকার সাঁওতাল বিদ্রোহ সম্পর্কে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তা থেকে সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রতি কোম্পানির দৃষ্টিভঙ্গি এবং পদক্ষেপের পরিচয় পায়।

উপসংহারঃ-

মহাফেজখানা থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করে।পাশাপাশি আগামীতেও এই তথ্য সংরক্ষণাগার থেকে পাওয়া তথ্য আগামী প্রজন্মকে ইতিহাসের সঠিক দিশা দেখাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top