একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা। Ekti Gach Ekti Pran Essay

একটি গাছ একটি প্রাণ।। Ekti Gach Ekti Pran Rachana\

একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা। Ekti Gach Ekti Pran Essay

ভূমিকাঃ-

মানুষের প্রাণ শক্তি দিয়েছে গাছ।গাছ শুধু মানুষকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্যাস ই দেয়নি,দিয়েছে খাদ্য এবং জীবনধারণের আরো প্রয়োজনীয় উপকরণ। অর্থাৎ মানুষের বাঁচার আশ্রয় হল অরণ্য কিন্তু সভ্যতার বিকাশের ফলে আজ তা ধ্বংসের মুখে।তাই পরিবেশ সচেতন প্রত্যেক মানুষ এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে “গাছ আমাদের বন্ধু”।

বেঁচে থাকার জন্যে গাছপালাঃ-

বাতাসের শ্বাস না নিতে পারলে আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত। বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে আমরা কার্বন ডাই অক্সাইড নামের বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে ছেড়ে দিচ্ছি। অন্যদিকে গাছপালা বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে তার পরিবর্তে বাতাসে অক্সিজেন ছাড়ে। গাছপালা না থাকলে একসময় বাতাসের অক্সিজেন শেষ হয়ে যেত আর আমরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তাম। কাজেই গাছপালা আমাদের জীবনের জন্য সৃষ্টিকর্তার একটি অত্যাবশ্যক অবদান।

বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তাঃ-

সৃষ্টিকর্তার সকল সৃষ্টির এক অপূর্ব সৃষ্টি আমাদের এই পৃথিবী।এই পৃথিবীকে সবুজে শ্যামলে ভরে দিয়েছে প্রাণদায়ী বৃক্ষরাশি।এই বিশ্বকে সুশীতল ও বাসযোগ্য করে রাখার ক্ষেত্রে বৃক্ষের অবদান অবর্ণনীয়।আবার মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেমন মৌলিক চাহিদা রয়েছে সেগুলি অধিকাংশই পূরণ করে এ বৃক্ষ রাশি। তাই মানব জীবনে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। মানুষ ও প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বৃক্ষের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তাই বৃক্ষকে মানব জীবনের ছায়াস্বরূপ বলা হয়। সে আমাদের যে কত উপকার করছে তা বর্ণনা করা অসম্ভব।

বনসম্পদ ও বনসৃজনঃ—–

সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে অবশ্যই প্রয়োজন বনসৃজন। জীবনযাপনের জন্য বা প্রাণধারণের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন।পরিবেশকে দূষণের হাত থেকে মুক্ত করতে প্রয়োজন বন সংরক্ষণ। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গাছপালার ভূমিকা অনস্বীকার্য একথা অবশ্যই আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।

বৃক্ষরোপণের গুরুত্বঃ-

পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য, সমগ্র জীবকুলের মঙ্গলের জন্য তথা মানব সমাজের মঙ্গলের জন্য বৃক্ষরোপনের গুরুত্ব অপরিসীম কারণঃ—–

  1. বৃক্ষ সকল প্রাণীকুলের ত্যাগ করা বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে নেয় আর তার পরিবর্তে দেয় জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন। ফলে প্রাণীরা এ জগতে সহজেই বেঁচে থাকতে পারে।
  2. বৃক্ষ প্রাণী জগৎকে খাদ্য দেয় মানুষ ও পশু পাখি বৃক্ষের ফল -ফুল এবং লতা- পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে।
  3. আসবাবপত্র, গৃহ,নৌকা, জাহাজ, বাঁধ, সেতু প্রভৃতি নির্মাণে বৃক্ষ আমাদের প্রয়োজনীয় কাঠ দেয়। এছাড়া বনভূমি থেকে মধু ও মোম সংগ্রহ করা হয়।
  4. গাছপালা মাটির উর্বরতা বাড়ায়, মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যা প্রতিরোধ করে।
  5. গাছপালা আমাদের জীবন রক্ষার প্রয়োজনীয় ওষুধ দান করে
  6. গাছপালা দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে
  7. সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতেও গাছের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

সূদূর প্রাচীন কাল থেকে বৃক্ষের অবদানঃ-

যুগ যুগ ধরে অর্থাৎ সৃষ্টির আদি যুগ থেকে গাছের সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক। প্রাচীন ভারতে বনভূমিতে গড়ে ওঠা আশ্রমিক শিক্ষার কথা আমরা সকলেই জেনেছি। প্রাচীন যুগ থেকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিয়েছে এই গাছপালা।

উপসংহারঃ-

বৃক্ষের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই শুধুমাত্র বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ বা বনসৃজন সপ্তাহ প্রতিবছর উৎসাহের সঙ্গে পালন করলেই দেশ, রাজ্য বা পৃথিবী সবুজ হয়ে যাবে না। পৃথিবীকে সবুজ করে রাখতে হলে আমাদের সচেতনতা দেশে বা সমাজে জাগিয়ে তুলতে হবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটি গাছ একটি প্রাণ অর্থাৎ গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান এই বোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ পৃথিবীর বুকে যতদিন এই সবুজ বৃক্ষ রাশি থাকবে ততদিন সমস্ত সৃষ্টি কুলে প্রাণের অস্তিত্ব টিকে থাকবে।

Leave a Comment