একজন হকারের আত্মকথা [Ekti Hokarer Attokotha Essay]
ভূমিকাঃ-
আমি সেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা রেল লাইনের আঁকাবাঁকা পথ ধরে এ ট্রেন ও ট্রেন স্বপ্ন ফ্রি করে বেড়ায় রোজ সেই কাক ডাকা ভরে আমার যাত্রা শুরু ক্রমে বেলাগড়িয়ে দুপুর গড়িয়ে অস্তরাগের আলো মেখে রাত নামে শহরে, আমি ও আমার ট্রেন তখনো ছুটে চলি নদী শহর লাল নীল সবুজ।
মোরকে টক মিষ্টি ঝালের স্বাদ বন্দি করে আমি কামরায় হাত বাড়ি লজেন্সিলে বেগম এই লেবুর লজেন্স আদার মুড়ি খেলেই মনে রাখবি শেষ শরীর
হকার হয়ে ওঠার গল্পঃ-
জীবনের বোধ হওয়ার মুহূর্ত থেকেই বুঝেছিলাম বিধিবাম মা-বাবা চলে গেলে নকালে ভাই বোন মিলিয়ে জনপ্রতিকের সংসার টানতে স্কুলের গণ্ডি প্রেরণা হলো না কোনদিনই কাঁধে তুলে নিলাম জীবনের বোঝা প্রথম প্রথম হাজারো ফেরির ডাক মানুষের শাসন আলাপের ভিড়ে পৌঁছে তারা বাড়িতে কোনদিন খাবার জুটতো কোনদিন জুটত না ।
কিন্তু জীবন বলল ছোট ছোট ভাই বোনের ক্ষুধার্ত কনডম বুকে নিয়ে যখন ট্রেনে উঠতাম কচিকাঁচার রঙিন ফিরে পদম্য আবদারে সেই কান্না মুছে যেত অচিরেই বুঝলাম কেবল অপ্রাপ্তিতে জীবন কোনদিন শেষ হতে পারে না ।
জীবন সংগ্রামঃ-
দিন বদলেছে ট্রেন বাসের রঙিন মোড়কের আবেদন তুচ্ছ হয়েছে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা স্বপ্ন হয়ে রয়ে গিয়েছে পূর্ববর্তী প্রজন্মের চোখে আমাদের আবেদন কমছে এই প্রজন্মের কাছে।
শৈশব আজ মূল্যহীন আর তরমুজের মধ্যে ধারা বুঝতে জানে তাই নামিদামি ব্রান্ডের কাছে নিতান্ত লেবু কিংবা আনারসের সেমিস্টার সাপ আজ অর্থহীন তবু স্বপ্ন ফেরি বন্ধ হয় না তবুও আমরা হেঁটে যাই কামরাই কামরায় লজেন্সি দিতে গো লজেন্স
উপসংহারঃ-
আধুনিক সভ্যতার কাছে ফেরিওয়ালাদের দাম কমে এলেও আমাদের জীবন যুদ্ধ থামেনা রাত থাকতে আজও শহরনগরের অন্ধকার গলিতে আলো জ্বেলে ওঠে জেগে উঠি আমরা খোলা কাঁদিতে চোট ওই রেল লাইন চলেছে আকাশ নদী দিগন্তের সীমানা ছাড়িয়ে আমরা ছুটে চটি কাঁধে নিয়ে ঝুলি স্বপ্নের এপার থেকে ওপারে